Tagore’s Khuku – রবীন্দ্রনাথের খুকু

তাঁর নাম ছিল অমিতা সেন – রবীন্দ্রনাথ তাকে কন্যাসম স্নেহ করতেন। তিনি তাঁকে সস্নেহে খুকু বলেই ডাকতেন। খুকুর জীবনটাও ছিল তাঁর নামের মতোই  ছোট্ট, সংক্ষিপ্ত । তাঁর জন্ম হয় অধুনা বাংলাদেশের ঢাকায় ১৯ মে ১৯১৪ সালে  এবং মারা যান ১৯৪০ সালের ২৪ মে, মাত্র ২৬ বছর বয়সে, রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর এক বছর আগে। অমিতা ৯ বছর বয়সে, ১৯২৩ সালে  শান্তিনিকেতন এসেছিলেন। সেখানে তখন আরেক অমিতা সেন ছিলেন । তিনি খুকুর ছেয়ে বয়সে বড় ছিলেন। আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন এই অমিতা সেন (Senior) পরবর্তীকালে নোবেল পুরস্কার প্রাপক অমর্ত্য সেনের মা। তিনি খুকুকে কাছ থেকে দেখেছিলেন। শান্তিনিকেতনে দুজনের মধ্যে ক্রমেই সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। পরবর্তীকালে অমিতা সেন খুকু সম্বন্ধে বলেছিলেন – ৯ বছর বয়সে খুকু যখন এখানে আসে, তখন সে ছিল নিতান্তই এক সাধারন মেয়ে . তাঁর গায়ের রঙ ছিলো কালো কিন্তু her features were sharp. তাঁর গলা ছিল পরিস্কার, উদ্দাত্ত ও অকৃত্তিম। রবীন্দ্রনাথ গানে সুর দেওয়ার পর  তাকে দিয়েই প্রথম গাওয়াতেন। এই গানগুলি সে উদ্দাত্ত কন্ঠে শান্তিনিকেতনের মাঠে মাঠে গেয়ে বেড়াতো।

একসময় রবীন্দ্রনাথ তাঁর কথা মাথায় রেখেই লি্খেছিলেন “আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি , আমার প্রান, 

সুরের বাঁধনে …” I have entwined my life with yours through the bonds of music.  যদিও কিশোরী খুকু আর রবীন্দ্রনাথের বয়সের পার্থক্য ছিল অর্ধশতকেরও বেশী তখন। কিন্তু গুরু-শিষ্যার  মধ্যে emotional bond ছিল বেশ মজবুত । রবীন্দ্রনাথ খুকুকে স্নেহ করতেন। শান্তিনিকেতনের তখনকার অধিবাসিদের কথায় খুকু ছিলেন musical genius  and an exceptional student – রবীন্দ্রনাথের প্রিয় ছাত্রছাত্রীদের একজন। শুধু তাই নয়, তখন অমিতা সেন (খুকু) রবীন্দ্রসঙ্গীতের এক উজ্জ্বল তারকা হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। ১৯৩০’র দশকে সে ছিল রবীন্দ্রসংগীতের জগতে এক ঘরোয়া নাম। রবীন্দ্রনাথ ভুল করেননি, খুকুর মধ্যে প্রতিভা দেখতে পেয়েছিলেন এবং এই প্রতিভার জন্যই রবীন্দ্রনাথ খুকুকে ভালোবাসতেন এবং গান ও অন্যান্য বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ খুকুর উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলেন। ফলে দুজনের মধ্যে একটা নৈকট্যের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। রবীন্দ্রনাথ একসময় ভেবেছিলেন ভবিষ্যতে তাঁর সব গানের রক্ষনাবেক্ষনের  দায়িত্ব (Custodian) এই খুকুকেই দিয়ে যাবেন। সেই কারনে রবীন্দ্রনাথ চাইতেন খুকু শান্তিনিকেতনেই থাকুক। এই ভেবে, শান্তিনিকেতনে তাঁকে একটা চাকুরিও করে দিলেন এই আশায় যে কলকাতায় উচ্চশিক্ষা শেষে সে এখানে ফিরে আসুক।

কিন্তু বিধি বাম। কলকাতা থাকাকালীন খুকু শম্ভু গাঙ্গুলি নামে এক সহপাঠীর প্রেমে পড়লেন। খুকুর Conservative family এই সম্পর্ক মেনে নিতে রাজী ছিল না তাই খুকু ঘর বাঁধার তাগিদে, সে তাঁর বন্ধুকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য উঠেপড়ে লাগলেন।

গুরুদেব হয়ত বুঝতে পেরেছিলেন তাই ১৯৩৮ সালে উদ্বিগ্নচিত্তে খুকুকে লিখলেন : “I will be very pleased if you can come to the Ashram and join us in our work.” Tagore further wrote-“ because you will collect the songs I have composed, use them and expand them, for which I am eager. . You have power, love and a beautiful voice, which is why I have long desired to have you do this work for me. I was worried that your ambition was on a different trajectory. If that is not so, and if you harbour any respect for me and devotion to the Ashram, give up whatever work you are doing and come over.”       

অল্প সময়ের জন্য খুকু আশ্রমে ফিরলেন বটে। কিন্তু একদিন গুরুদেবকে বলে বসলেন যে- সে আশ্রমে থাকতে রাজী আছেন তবে একটা শর্তে । কি শর্ত ? তাঁর বন্ধু শম্ভুকেও আশ্রমে একটা চাকুরী দিতে হবে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর এই শর্ত মোটেই ভাল ভাবে নিলেন না।  তিনি অসম্মতিও প্রকাশ করলেন না, ব্যাপারটা বিশ্বভারতীর উপর ছেড়ে দিলেন। কারন তিনি চেয়েছিলেন খুকু থাকুক।

কবিগুরুর সান্নিধ্য, স্নেহ, ভালবাসা এবং  তাঁর জীবন তৈরী করার সুবর্ন সুযোগ – সব কিছুকে তুচ্ছ করে তাঁর প্রেমকে মর্যাদা দিতে সে একদিন চাকুরী ছেড়ে আশ্রম ত্যাগ করলেন। এইভাবেই গুরু শিষ্যার মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হল। সে শান্তিনিকেতনে আর কোনদিন ফেরেনি। কোলকাতায় ফিরে রবীন্দ্রনাথকে একটা চিঠি লেখেন যা ওই পরিস্থিতিতে ঘৃতাহুতির কাজ করলো, ফলে তিক্ততা চরমে পৌঁছে গেল। রবীন্দ্রনাথ তাঁর গান রেকর্ড করার অনুমতি তুলে নিলেন এবং পুর্বের সমস্ত রেকর্ড করা এ্যালবামগুলো বিক্রি বন্ধ করে দিলেন।  (stopped publication and reproduction of her earlier albums)।

১৯৪০ সালের জানুয়ারী মাসে, যখন খুকু অসুস্থ হয়ে কলকাতার এক হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন, তখন রবীন্দ্রনাথ লিখলেন – “worried by the state of your health” and was praying for a quick recovery. এরপর রবীন্দ্রনাথ তাঁর গান বিক্রী করার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেন।

সেই বছরই ২৪ মে খুকু ঢাকায় মারা যান, তাঁর ২৬ তম জন্মদিনের ৪ দিন পরে। এইভাবেই দুঃখজনক্ ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে হটাতই এক সম্ভাবনাময় জীবনের অবসান হল।  রবীন্দ্রসঙ্গীতের আকাশ থেকে এক উজ্জ্বল নখত্র খসে পড়লো ।

রবীন্দ্রনাথ খুকুর কাকাকে শোকপত্রে লিখলেন – “I  had great affection for Khuku, but I failed to save her from an evil fate.” In July 1940, a short obituary in the Ashram’s Newsletter said “ By her death, Bengal has lost one of its most talented daughters…. Long shall we mourn the abrupt end of a youthful life so rich in possibilities.”  

)কয়েক বছর আগে এই লেখাটি আমার ব্লগে দিয়েছিলাম “In memory of a musical genius” নামে । এটা তারই সংক্ষিপ্ত বাংলা রূপান্তর । সেখানে অনেক কমেন্ট এসেছিল। তাঁর মধ্যে দু একটি উল্লেখযোগ্য। সেখানে Sanjukta নামে জনৈকা পাঠিকা লিখেছেন “Thanks for the post. Khuku Amita Sen was  my mother’s cousin. Her father was my grandfather’s older brother and her mother was my grandmother’s sister.”

Me (anilcm)  : “If I am correct, she (Amita Sen) was your “Masi”. What a pleasant surprise to meet you here and thanks for your comments. I would like to request you to add something from your memory or from your knowledge which is missing in this post. Your contribution to the post will make it very authentic……… I wonder what a voice she was having. Though she was a popular singer but today nobody knows her. That made me write a post in her memory. She came with a very short life but last spell of life was very tragic. Regards, “

Sanjukta : “I don’t know her at all. She died when my mother was about 10 years old. We have heard a lot of stories about her. You may be interested to know that Binayak Sen is the son of Khuku Amita Sen’s brother Debaprasad Sen. Binayak’s wife Ilina has published a book on Amita where there family reminiscences together with an article by Amartya Sen’s mother Amita sen as well as my mother Sunanda DasGupta.”

Me : “Thank you so much for the information you shared”.

Compiled By : Anil Mandal

Leave a comment